চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে পাচার করে নিযে যাওয়ার সময় জনতা চুনারুঘাট বাজার থেকে একটি মায়া হরিণ উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ৬টায়। বর্তমানে হরিণটি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের রেসকিউ সেন্টারে বনবিভাগের অধীনে চিকিৎসা চলছে।
বন বিভাগ জানান, শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের একটি মায়া হরিণ পুরাতন ঢাকা সিলেট মহাসড়ক পারাপার হতে গিয়ে রাস্তা পাশে দেওয়া কাটা তারের বেড়ায় আটকে যায়। এসময় সড়ক দিয়ে বিবাড়িয়া থেকে বালু নিতে আসা একটি ট্রাকের চালক (পরিচয় জানা যায়নি) হরিণটি দেখতে পায়। সে সাথে সাথে হরিণটিকে তাড়াহুড়া করে উদ্ধার করে ট্রাকে করে চুনারুঘাটের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু কাটা তারের বেড়ায় আটক হরিণটি ছাড়িয়ে নিতে ট্রাকের চালক তাড়াহুড়া করে হরিণের সিংগুলো ভেঙ্গে ফেলে।
হরিণের পায়ের কুড়ায় মারাত্বক আঘাত পায় এবং শরীরের কাটাছেড়ার আঘাতের যন্ত্রনায় ট্রাকের উপর থেকে হরিণ চুনারুঘাট বাজারের দিকে রওয়ানা দেয়। এসময় মুজিবুর নামে এক ব্যক্তি যাবার সময় বিষয়টি দেখতে পেয়ে সেও তাদের পিছু নেয়। এক পর্যায়ে চুনারুঘাট বাজারের টু-স্টার হোটের সামনে এসে হরিণটি ঝাপ দিয়ে নিচে পড়ে যায়। এসময় ট্রাকের চালক হরিণটি রেখেই ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় মুজিবুরসহ স্থানীয়রা হরিণটি উদ্ধার করে। ঠিক একই সময়ে সাতছড়ি রেঞ্জের তেলমা বিটের বন প্রহরী মহিতুুল ইসলাম চুনারুঘাট বাজারে সদাই নিতে এসেই এ ঘটনা দেখতে পায়। বিষয়টি সে সাথে সাথে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন ও বিট কর্মকর্তা রুমি সামসুদ্দিনকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে এসে হরিণটি উদ্ধার করে। পরে হরিণটিকে চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
হরিণটি অনুমান লম্বায় সাড়ে ৩ ফুট এবং প্রস্তে আড়াই ফুট হবে। পায়ের কুড়া ভেঙ্গে যাওয়ায় হরিণটি উঠে দাড়াতে পারছে না। তাকে বর্তমানে সাতছড়ি বিটে রেসকিউ সেন্টারে রেখে বন বিভাগ চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ বিষয়ে সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, হরিণটি বর্তমানে অসুস্থ্য। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ্য হলে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বিট কর্মকর্তা রুমি সামসুদ্দিন জানান, আমরা ঘটনার পর পরই কাটাতারের বেড়ায় আটক স্থানটি চিহ্নিত করেছি। হরিনটি কাটাতারে আটকা পড়লেই ট্রাক চালক হরিণটি উদ্ধার করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন হরিণটিতে এখানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া অনেক কঠিন। কারণ তাকে ইনজেকশন পুশ করতে হয় এবং খাওয়ার ঔষদও দেওয়া হয়েছে। আমরা হরিণটির বিষয়ে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার সাথে আলোচনা করেছি। তাদের সিদ্ধান্ত মতে তাকে গাজীপুর সাফারি পার্কে পাঠানো হতে পারে।