করোনা ভাইরাসঃ আসুন আল্লাহর কাছে ক্ষমা আর পানাহ চাই ঘরে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। ভাবছেন কি করব আর কি করব না।
বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাপার কাগজে তা নিয়ে নির্দেশনা দিচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়া সতর্কতামূলক বার্তা দিচ্ছে। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রতিনিয়ত প্রচার করছে করোনার সর্বশেষ আপডেট, সাথে কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয় বলে দিচ্ছে।মানুষকে ঘরে রাখার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লক ডাউন করে দিচ্ছে। আমারও এই অবস্থা থেকে ব্যতিক্রম নই।
আমাদের সরকার ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করছে। আগে পিছে সরকারি ছুটি মিলিয়ে কার্যত ১০ দিনের জন্য দেশ লক ডাউন করা হয়েছে।
মানুষজন মনের কষ্টে (আতংকে) প্রিয়জনের কাছে দ্যাশের দিকে ছুটছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তা ঘাটে জন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে নির্দেশনা ছিল তা যাত্রাকালে কেউই মানতে পারছেন না বা মানছেন না বা তাদের মানানো যাচ্ছে না। তাদের যেতেই হবে। এই যাত্রা ঈদের ছুটিতে সচরাচর দেখা যায়।
আর দেখা গিয়েছিল একাত্তর এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়।মাসটিও ছিল মার্চ। মানুষের মধ্যে ভয় আর অনিশ্চয়তা। এই ঢাকা তাদের জীবিকার জন্য অর্থ এনে দিতে পারলেও, জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারছে না।নীতিবাজ আর দুর্নীতিবাজ, ধনী-দরিদ্র কেউই স্বস্তির মধ্যে নেই। তথাকথিত ক্ষমতাবান আর ধনীরা কিছু হলেই দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য ছুটে যান। কিন্তু সারা বিশ্ব লক থাকায় এবারে সেই সুযোগটি তারা পাচ্ছেন না। বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের অবস্থা আরও বেশী করুণ।
ইতালির সরকার প্রধান তাঁর অপারগতার কথা স্বীকার করছেন। তারা হাল ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের ভরসা একমাত্র উপরওয়ালা। জীবন মরণের মালিক একমাত্র একজন, তিনি মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন।তাঁর কাছেই আছে সমস্ত মহামারীর দাওয়াই। আমরা লোভ লালসায় ভুলে গিয়েছিলাম সবকিছু। গায়ের আর ক্ষমতার জোরে সবকিছু নিজেদের করে নিতে চেয়েছে মানুষ। প্রকৃতির উপর চলছে অবাধে অত্যাচার।
মানুষজন বড় বেশী পাপে নিম্মজ্জিত হয়ে পড়েছে। যদিও আমরা জানি আমাদের একদিন চলে যেতে হবে, কিন্তু এইভাবে একসাথে মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে যাব তা অনেকই ভাবতে পারেননি।পরকাল বলে যে একটা বিষয় আছে অনেকের কাছেই সেটা অবিশ্বাস্য।মানুষ আর প্রকৃতিকে ভালবাসতে শিখতে হবে।
জানিনা এই করোনা থেকে যাদের শিক্ষা হওয়ার কথা তারা শিখবেন কিনা। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে বেশীদিন টিকে থাকা যায় না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ বলে দিয়েছেন কিভাবে তিনি বিভিন্ন সময়ে মানুষের পাপের কারণে সভ্যতা ধ্বংস করে দিয়েছেন। ইতিহাসের পাতা থেকে শিক্ষা নেয়াটা কত জরুরী তা আমরা আবারো হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
নিজেদের মধ্যে না থেকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য অনেকই ব্যাপকভাবে সৃষ্টিকর্তার নাম নিচ্ছেন। মসজিদে জামাতে নামাজ না পড়ার কথা বলা হলেও, গ্রাম গঞ্জের মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি ব্যাপকহারে বেড়েছে বলে জানা যায়।মানুষজন ভয় পেয়েছে। যদি মরে যাই। মরে তো যেতেই হবে একদিন।দুদিন আগে নয়তো পরে।এইতো তফাৎ।তাই আসুন পূর্ববর্তী কাজের জন্য মহান আল্লাহ্ পাকের নিকট তওবা করি। মাফ চাই।
আর আল্লাহর কাছে অঙ্গিকারাবদ্ধ হই জীবনে আর কোন অন্যায় আর পাপ করব না। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আমাদের অবশ্যই মাফ করবেন এই বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে ধারণ করি। আল্লাহ্ সবাইকে সুস্থ রাখুন।সুস্থভাবে আমাদেরকে যার যার জায়গায় ফিরিরে দিন। আমিন ছুম্মা আমিন।
লেখক,
আনোয়ার ফারুক তালুকদার
ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক।