নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস দিনদিন বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন নতুন নতুন করে সংক্রামণ দেখা দিয়েছে। এছাড়া মৃত্যুর হারও বেড়ে চলেছে প্রতিদিনই। সংক্রামণ ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। কিন্তু এরপরও ঘরে ফেরানো যাচ্ছে না সাধারণ মানুষকে। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে বাহিরে বের হচ্ছেন সব শ্রেণি ও বয়সের মানুষজন।
স্থানীয় সচেতনমহল বলছেন- শুধুমাত্র সচেতন ও প্রচারণা চালিয়ে মানুষকে ঘরে ফেরানো যাবে না। মানুষকে ঘরে ফেরাতে হলে এ্যাকশনে যেতে হবে সেনাবাহিনীকে। তাহলেই মানুষ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ হবেন।
জানা যায়, স্কুল-কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সাথে কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিনরাত বিরামহীনভাবে কাজ করছেন হবিগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সাথে মাঠে রয়েছেন জনপ্রতিনিধিরাও। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানী প্রতিদিন ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন। পাশাপাশি সচেতনতামুলক প্রচারণা চালাচ্ছে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য। কিন্তু কে শুনে কার কথা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হবিগঞ্জ জেলা-উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে অপ্রয়োজনে মানুষের আড্ডা কমানো যাচ্ছে না। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বললেও দলবেধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন যেখানে সেখানে। সাধারণ মানুষের এমন দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন সচেতন মহল। এসব দায়িত্বহীন মানুষদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে অকারণে বাহিরে ঘুরাঘুরি করলে, এবার না বুঝিয়ে সেনাবাহিনীকে এ্যাকশনে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে গত ১ এপ্রিল সেনাবাহিনী কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিলেও দৃশ্যমান হয়নি। তাই এবার কঠোর না হলে করোনা এক সময় নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবে বলে মনে করেন হবিগঞ্জের সচেতনমহল।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. আনিছুর রহমান বলেন- ‘অনেকদিন ধরে মানুষকে বুঝানো হচ্ছে ঘরে থাকার জন্য। কিন্তু কেউ কথা শুনতে বাধ্য নয়। অকারণে বাহিরে এসে তারা ঘুরাঘুরি করছে, আড্ডা দিচ্ছে। তাই এখন বুঝানো বন্ধ করে সেনাবাহিনীতে এ্যাকশনে যাওয়া দরকার।’
শ্যামলী এলাকার ব্যবসায়ি রুবেল মিয়া বলেন- ‘কথা আছে সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠে না। তাই মানুষকে ঘরে ফেরাতে হলে সেনাবাহিনীকে এ্যাকশনে যাওয়ার বিকল্প নাই। সেনাবাহিনী এ্যাকশনে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’
স্কুল শিক্ষক আরফান চৌধুরী বলেন- ‘দিনদিন বাংলাদেশে করোনাভাইরাস জটিল আকার ধারণ করছে। তাই এখন আমাদের ঘরে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো শহরের সচেতন মানুষও যেন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তারা অকারণে ঘুরাঘুরি করছেন। তাই সেনাবাহিনী যদি এ্যাকশন শুরু করে তাহলে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।