এম এ আই সজিব ॥ হবিগঞ্জে হঠাৎ বৃষ্টিতে শতাধিক ইটভাটার প্রায় ১০ কোটি টাকার কাচা ইটের ক্ষতি সাধন হয়েছে। সদর উপজেলার সুঘর রয়েছে নিউ পলাশ ব্রিকস, সুপার ব্রিকস, জননী ব্রিকস, ভরসা ব্রিকস, পপুলার ব্রিকস। সেখানে বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়েছে লক্ষলক্ষ কাঁচা ইট। নষ্ট হয়েছে বাহুবল উপজেলার পলাশ ব্রিকসের কয়েক লাখ ইট। শুক্রবার ভোররাতে প্রবল বর্ষণে জেলার শতাধিক ইট ভাটার প্রায় ১০ কোটি টাকার ইটের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইট ভাটা মালিক সমিতি।

তাদের দাবি অনেকে ঋণ নিয়ে ভাটা পরিচালনা করেন। যাদের জন্য এই ক্ষতি পূরণ কষ্টকর হবে। হাফিজপুর এলাকায় অবস্থিত পালাশ ব্রিকস এর ম্যানেজার অমরেশ দত্ত জানান, তাদের ভাটায় ১০ লাখ কাঁচা ইট ছিল। এছাড়া চিবনীর মধ্যেও ছিল বেশ কিছু কাঁচা ইট। শুক্রবার ভোর রাতে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তারা এই কাঁচা ইট বাঁচাতে পারেনি। ইট রক্ষার প্রস্তুতি নিতে নিতেই বৃষ্টির পানি সব শেষ করে দিয়েছে। তিনি জানান, প্রতি মৌসুমে তারা ৫০ থেকে ৫৫ লাখ ইট পুড়িয়ে থাকেন। এবারও সেই পরিমান পোড়ানো সম্ভব ছিল। সেই প্রস্তুতি থেকে ১০ লাখ কাঁচা ইচ শুকাতে রাখা ছিল। কয়েকদিন পরই এগুলো চিবনীর মধ্যে দেয়ার কথা ছিল। অমরেশ দও আরো জানান, ১০ লাখ কাঁচা ইটের মূল্য আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা হবে। এই টাকা ক্ষতি হয়েছে তাদের।

কোটি টাকার কাচা ইটের ক্ষতি সেই সঙ্গে রয়েছে ভাটা পরিষ্কার করার কাজ। বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাওয়া ইট লেবার দিয়ে সরাতে হবে। এখানেও তাদের ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হবে। চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা এলাকার আদুরী ব্রিকস এর ম্যনেজার আল ইমরান খোকন জানান, তাদের ভাটাই প্রায় ৬লাখ কাচা ইট ছিলো যা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে তাদের প্রায় ১৫লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও আবার নষ্ট ইট ফেলতে লেবার খরচ করতে হবে তাদের ২থেকে ৩লাখ টাকা। সদর উপজেলার সুঘর এলাকায় অবস্থিত জননী ব্রিকস এর মালিক রুবেল মিয়া। তিনি জানান, কয়েকজন শেয়ারে তারা এই ভাটা পরিচালনা করেন। ভাটায় ৪ লাখ কাঁচা ইট ছিল। যা শুক্রবারের ভোরের বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, আনুমানিক ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আবার নষ্ট ইট ফেলতে লেবার খরচ করতে হবে।

এতে তারা বড় ধরণের ক্ষরি মূখে পড়েছেন। তিনি জানান, হঠাৎ বৃষ্টি হবে বুঝতে পারেননি। যে কারণে ইয়াডে পড়ে থাকা কাঁচা ইট বাঁচাতে পারেননি এ ছাড়াও চুনারুঘাট, নবীগঞ্জ, বানিয়াচঙ্গ, মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভাটাগুলোর কাঁচা ইট বৃষ্টিতে শেষ হয়ে গেছে। হবিগঞ্জ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কুতুব উদ্দিন জানান, প্রতিটি ভাটাই কাঁচা ইট ছিল। এই সময় ভাটা মালিকরা ইট কাটিয়ে তাকেন। তিনি জানান, ভাটা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য পেয়েছেন তাতে ভাটা প্রতি গড় ৩ লাখ করে ইট নষ্ট হয়েছে। এতে শতাধিক ভাটায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ইটের ক্ষতি হয়েছে। তিনি উলেখ করেন, অনেকে আছেন যারা ঋণ নিয়ে ভাটা পরিচালনা করেন। তাদের পক্ষে এই ক্ষতি সামাল দেয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে।