নিজস্ব প্রতিবেদক : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড়ি এলাকার সাতছড়ি উদ্যানে ট্রাক ছিনতাই করে চালক সাগর সরকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে দুই আসামি।
বুধবার (২০ মে) হবিগঞ্জ দ্রুত বিচার আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুলতান উদ্দিন প্রধানের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামি বাবুল ও আলাউদ্দিন।
এর আগে এ দুই আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ মে বিকেলে চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্য থেকে গাড়ি চালক সাগরের মৃতদেহ উদ্ধার করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামসহ একটি টিম।
নিহত সাগর হবিগঞ্জ জেলা শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকার প্রদীপ সরকারের ছেলে।
আসামি আলাউদ্দিন (১৮) শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড়চর গ্রামের আব্দুল কাদির মিয়ার ছেলে ও বাবুল মিয়া (২২) হবিগঞ্জ শহরতলীর যশেরআব্দা এলাকার তাজু মিয়ার ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে জানা যায় ঘটনার আগের দিন ১২ মে চুনারুঘাট উপজেলার একটি বাগানে আসামি বাবুল মিয়া, আলাউদ্দিন ও তাদের অন্য সহযোগীরা মিলে পরামর্শ করে ট্রাকটি ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক ১৩ মে সকালে তারা সবাই শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে একত্রিত হয়ে অলিপুর যায়। সেখানে গিয়ে ট্রাক মালিক কবির মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে ট্রাক ভাড়া করে।
কবির মিয়া চালক সাগর সরকারকে দিয়ে অলিপুরে ট্রাক পাঠান। ঘাতকরা ট্রাকে ওঠে। সাগর সরকারের পূর্ব পরিচিত থাকায় কৌশলে ঘাতক বাবুল মিয়া চালকের আসনে বসে। সে নিজেই গাড়ি চালাতে শুরু করে। মাধবপুর উপজেলা তেলিয়াপাড়া হয়ে সাতছড়ি জঙ্গলের পাশে গিয়ে ট্রাক থামায় সে।
ঘাতক বাবুল মিয়া ও আলাউদ্দিন তার সহযোগীরা ছুরি দেখিয়ে জোরপূর্বক চালক সাগর সরকারকে সাতছড়ি জঙ্গলের গহীন উঁচু টিলার উপর নিয়ে যায়। সেখানে তারা সাগরকে হত্যা করে লাশ সেখানেই ফেলে রাখে।
এর পর ট্রাক নিয়ে মাধবপুর উপজেলার ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী এলাকার মনতলায় তাদের আরেক সহযোগীর কাছে চলে যায়। সেখানে তারা তাদের ছিনতাইকৃত ট্রাকটি একটি নিরাপদ স্থানে রেখে নিজেরা আত্মগোপন করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অন্য জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান পরিচালনা চালাচ্ছে।