বাহার উদ্দিন, লাখাই থেকে : হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দেশী প্রজাতির মাছের গোরবোজ্জ্বল ইতিহাস থাকলেও তা দিন দিন ম্লান হতে চলেছে। দেশী প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধি ও তা রক্ষায় সংসলিস্ট কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ লক্ষ্যনীয় নয়।
এককালে হাওরবেষ্ঠিত লাখাইয়ে প্রায় ১৩১ প্রজাতির মাছের বিচরন থাকলেও বর্তমানে ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে।এক সময় লাখাইয়ে মলা,ঢেলা,কালিবাউশ,টেংরা, টাকি,বোয়াল,শোল,রানী,গইন্যা, বাছা, চিতল,হল্লা,তারা বাইন,পুঁটি,খোলসে, দেশী আইর,দেশী রুই,কাতলা,পলই,মেনী চিংড়ি, চান্দা, পো্য়া,পাবদা,লাছু,বাতাসি, ফেসা,শিং,মাগুর,বাইলা, বাইন সহ নানা প্রজাতির মাছের প্রাচুর্য থাকলেও বর্তমানে অনেক প্রজাতির মাছই বিলুপ্তির পথে আবার কোনটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
লাখাইর নদনদী, বিল,ঝিল,জলাশয়গুলো যুগ থেকে যুগান্তরে খননের আওতায় না আসায় এগুলো পলিজমে কোনটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে আর কোনটির নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে।
এরই মধ্যে নতুন উপদ্রব হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে অব্যাহত ভাবে হবিগঞ্জ এর উজানে সদর উপজেলা,শাায়েস্তাগন্জ, ও মাধবপুর উপজেলায় গড়ে উঠা শিল্পলারখানার অপরিশোধিত শিল্পবর্জ্য।শিল্পবর্জ্যের দূষণের কবলে পড়ে লাখাইর জলজ প্রানী আজ অস্তিত্ব সংকটে নিপতিত। লাখাই উপজেলা মাছের উৎপাদনে একটি উদ্বৃত্তের উপজেলা।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় এ উপজেলায় বাৎসরিক মাছের মোট উৎপাদন ৬৩৩৮.০৭ মেট্রিক টন।এর মধ্যে পুকুরে উৎপাদিত মাছের পরমান ১৯৫৫.৫ মেট্রিকটন, প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত মাছের পরিমান৩৯৫০.৮২ মেট্রিকটন। উপজেলার ১৩১ প্রজাতির মাছের মধ্যে ৭ টি প্রজাতির মাছ বর্তমানে বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায়। বছরে উদ্বৃত্ত ৩১৮০.৯২ মেট্রিকটন।
মৎস্য অধিদফতর সূত্রে আরো জানা যায় দেশী প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধি ও তা রক্ষায় মৎস্য সংরক্ষন আইন বাস্তবায়ন, কলকারখানার দূষিত বর্জ্য প্রতিহত,অভয়াশ্রম স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অফিসার ইদ্রিস তালুকদার এর সাথে আলাপকালে জানান আমরা বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজাতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। মাছের উৎপাদন বৃূদ্ধির লক্ষে মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপনে মাসিক সমন্বয় সভা ও জাইকা প্রকল্পের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ছাড়াও অব্যাহত রাসায়নিক মিশ্রিত শিল্পবর্জ্য প্রতিহতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষনে পদক্ষেপ গ্রহন করছি।