সৈয়দ সালিক আহমেদ ॥
অপরিপক্ষ লিচুতে সয়লাব হয়ে গেছে জেলার বিভিন্ন হাট বাজার। আর এসব লিচু কিনে একদিকে যেমন প্রতারিত হচ্ছে মানুষ অন্যদিকে মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসব ভয়ংকর রাসায়নিক পদার্থ ও কীটনাশক মিশ্রিত ফল খেলে কিডনি ও ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাঙ্গালীর কাছে জৈষ্ঠ মাস মধু মাস নামে পরিচিত। এই মাসে দেশীয় বিভিন্ন ফলে ভরে যায় হাট বাজার।
বর্তমানে বাজারে যেসকল লিচু এসেছে তা ব্রাম্মণবাড়িয়ার মখন্দপুর ও কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে।
মানুষ নিত্য দিনের খরচের পাশাপাশি কিছু হলেও পরিবারের জন্য বিভিন্ন ফল কিনে নেয়। কিন্তু কিটনাশক ছড়ানোর কারণে এসব লিচু হয়ে গেছে ক্ষতির কারণ। আগাম মোটা করণের জন্য বিভিন্ন হরমুনের ব্যবহার আর টকটকে লাল করণের জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়।
লিচু রসালো হওয়ার আগেই বাগানের মালিক ও ব্যবসায়ীরা একের পর এক রাসায়ানিক কিটনাশক ছিটাতে শুরু করে। এসব কীটনাকের মধ্যে ট্রায়াকন্টানল, ম্যানকোজেব, কার্বেন্ডাজিম, সাইহ্যালেথ্রিন, নাইফারমেথ্রিনসহ বিভিন্ন কিটনাশক ধাপে ধাপে ব্যবহার করা হয়। আর এসব রাসায়নিক পর্দাথের কারণে অপরিপক্ষ লিচুর রং উজ্জল ও আর্কষনীয় হয়।
আবার অনেকে লিচুকে লাল করার জন্য মার্কারী সালফাইড জাতীয় কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এতে লিচুর রসালো গদ্ধের পরিবর্তে কেমিক্যালে গন্ধ নাকে আসে।
আমাদের দেশে লিচুর জাত গুলোর মধ্যে দেশি লিচু, চায়না ৩, বেদানা, বোম্বাই, বারি লিচু ১, বারি লিচু- ২, বারি লিচু ৩, এলাচসহ বিভিন্ন জাতের লিচু রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে এসব লিচুর কদর একটু বেশী।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, অপরিপক্ষ লিচুতে কেমিক্যাল দেওয়ার পরও এসব লিচু এক থেকে দুই দিনের ভিতরে বিক্রি করতে না পারলে নষ্ট হয়ে যায়। তখন আমাদের অনেক লোকসান পোহাতে হয়। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, টাকা দিয়ে পরিবারের লোকজনের জন্য বিষ কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
সাইফুল ইসলাম সেলিম নামে একজন ক্রেতা জানান, লাল টকটকে দেখে লিচু কিনতে গিয়ে দেখি লিচুরতো কোন গন্ধ নাই উল্টো রাসায়নিকের গন্ধ, তাই লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছি।
এবিষয়ে ডেপুটি সিভিল র্সাজন ডাঃ মুখলেছুর রহমান উজ্জল দৈনিক শায়েস্তাগঞ্জকে বলেন, যেকোন রাসায়নিক কেমিক্যাল মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। আর সেটা যদি দীর্ঘমেয়াদী হয় তাহলে পাকস্থলী, কিডনি নষ্ট, ক্যানসারসহ জটিল রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মিশকাতুল ইসলাম দৈনিক শায়েস্তাগঞ্জকে জানান, কীটনাশক বিভিন্ন কেমিক্যাল পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করা যায়, তবে এগুলো কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্যবহার করতে হবে এবং এসব কেমিক্যাল ব্যবহারের ৮-১০ দিন পর ফল বাজারজাত করতে হবে।
এতে করে রাসায়নিক ক্রিয়া কিছুটা কমে যায়। কিন্তু কোন অবস্থাতে মাত্রাতিরিক্ত এবং রং করার জন্য কোন রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না। এটা মানব দেহের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর।