এম.এ কাদের : হবিগঞ্জ জেলা মাধবপুর উপজেলার ৭নং জগদীশপুর ইউপি নির্বাচনে খড়কী গ্রাম থেকে মেম্বার মোঃ মুনায়েম খা পূর্ণরায় মেম্বার নির্বাচিত হন । তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ছিলেন মোঃ আব্দুল হাই ও মারুফ । দুজনই নির্বাচনে পরাজিত হন । নির্বাচনী প্রচারনা চলাকালীন সময়ে এদের সমর্তকদের মধ্যে রেশারেশি সৃষ্টি হয় । নির্বাচনের পরবর্তীকালে রাখাল নিয়োগ কে কেন্দ্র করে এলাকায় দু গ্র“পের মধ্যে সৃষ্টি হয় মত বিরোধ আর এই ইস্যুর সাথে নির্বাচনী পূর্ববর্তী প্রতিহিংসার মাত্রা সংযোজন করায়, কোনো না কোনো ভাবে সমগ্র গ্রামটি দুই অংশে বিভক্ত হয়ে দলাদলী ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে ।
এক পর্যায়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম সফিকের ইন্দনে শুরু হয় দাঙ্গা হাঙ্গামা । এর স্ব-হিংস হামলা ,লুঠপাট, মার্কেট -দোকান –পাট এবং বাড়ীঘর পর্যন্ত এ হামলায় ক্ষতিগস্থ হয় । সহিংসতার একপর্যাযে দু পক্ষের দুইজন নিহত হন । তার পরও দুইদলের দাঙ্গা হাঙ্গামা,লুঠপাট,মারামারি চলতেই থাকে । স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কঠিন নিয়ন্তের কারনে এবং দুইটি হত্যা মামলা হওয়ায় গ্রেপ্তার এরানোর লক্ষ্যে গ্রামটি পুরুষ শূন্যতো বটেই আশিভাগ শিশু-মহিলা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। তবুও দিনের শেষে রাতের অন্ধকারে এক দলের লোক অন্যদলের বাড়ীতে মারাত্মক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সহিংসতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবাড়ীতেই হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । রাতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশী কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে । তাই মানবতার দোয়ারে ভুক্ত ভোগীদের ফরিয়াদ এর জন্য দায়ী কে ? যারা এ সহিংসতা ও হত্যার জন্য দায়ী তাদের নামটি পর্যন্ত ভোক্ত ভোগী এলাকাবাসী মুখে আনতে সাহস পাচ্ছে । কারণ তারা জনগনের সেবার ব্রত নিয়ে নির্বাচনের জয়- পরাজয়ের মালা গলায় ধারন করে আছে । কিন্তু তাই বলে বিবেকতো আর থেমে থাকেনা! এই বিবেকই স্বাক্ষী দিচ্ছে ঘাতক খুন, লুঠপাট এবং এলাকায় সহিংসতা সৃষ্টিকারীই হচ্ছে বিজয়ী মেম্বার মোনায়েম খা ,মারুফ এবং তাদের উগ্র-সমর্থকরা ।
খড়কী গ্রামের বাস্তব চিত্র হলো এলাকার প্রায় নব্বই ভাগ নারী-পুরুষই রোহিঙ্গা উদবাস্তুদের মত শ্বরনার্থী হয়ে এ গ্রাম ওগ্রামে গিয়ে কোন প্রকারে জীবন যাপন কাটাচ্ছে। মোনায়েম খা গ্র“পের একজন লোক আহত হয়ে চিকিৎসাদিন অবস্থায় মারা যায়। মৃত্যুর সংবাদ শুনে আঃ হাই গ্র“পের লোকজন গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ী থেকে পালিয়ে যায় । পুরুষ শূন্য বাড়ীতে মোনায়েম খার নেতৃত্বে এবং চেয়ারম্যানের মদদে বিশাল এক সন্ত্রাশী দল মারাতœক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আঃ হাই এর বাড়ীতে হামলা করে বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও বেশ কয়েকজন লোককে কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করে এবং একজন বৃদ্বা মহিলাকে কুপিয়ে হত্যা করে । আর এ সুযোগে নগদ টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার, ধান-চাউল ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুঠপাট করে । সহিংসতা আর লুঠপাট মকেটসহ লাখ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয় ।
দুইটি হত্যা মামলার গ্রেপ্তার এরানোর লক্ষে এবং সহিংসতার ভয়ে সমগ্র খড়কী গ্রাম পুরুষ শূন্যতো বটেই আশিভাগ মহিলা ও শিশু গ্রাম ছেড়ে রাতের আধারে এক কাপড়ে শুধুমাত্র প্রান নিয়ে পালিয়ে গেছে । এর মধ্যে বৃদ্বা ও গর্ভবর্তী মাও রয়েছে ।
তারপরও মোনায়েম খা গ্র“পের লোকজন রাতে আধারে আঃ হাই গ্র“পের লোকজনদের বাড়ীতে গিয়ে মা-বোনদের ইজ্জত হানীও মালামাল লুট করার চেষ্টা করছে ।
এমনটাই বললেন বাড়ীতে থাকা মহিলারা । এছাড়া আরো বলেন যে, আমাদের জীবন এখন নিরাপদ নয় কখন যে কি হয়ে যায় এই ভয়ানক আতংকে দিন কাটাচ্ছি । এখনও প্রতিনিহত হানাদিচ্ছে প্রতিপক্ষের বাড়ীতে । প্রশাসনিক কোন তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ সহিংসতা আর বর্বরতা আজকের সভ্যতা ও শান্তি——কামী বিশ্বকে বৃদ্বা আঙ্গুল দেখিয়ে পরিহাস করে বলছে “দেখো গ্রগতিশীল শান্তি——কামী বিশ্ব আমরা আবারো কিভাবে আদিম বর্বরতার যুগ তোমাদের উপহার দিচ্ছি” । তাই মানবতার দ্বারে ভ’ক্তবোগী নিরিহ খড়কী বাসীর জিজ্ঞাসা এই ধ্বংস আর পরিনতিরি জন্য দায়ী কে ? যারা এ সহিংসতার জন্য দায়ী তাদের নামটি পর্যন্ত অসহায় এলাকাবাসী মুখে আনতে সাহস পাচ্ছেনা । ভয়ে আতংকে চেহারা বিবর্ন হয়ে যাচ্ছে । কারন যারা এ নির্মমতার জন্য তার তো জনগনের সেবার ব্র“ নিয়ে নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের মালা গলায় ধারন করে আছে । তাই বলে বিবে তো আর থেমে থাকতে পারেনা । এই বিবেকই স্বাক্ষী দিচ্ছে এ বর্বরতা , খুন , লুঠপাট , ও নৈরাজ্য সৃষ্টি কারীই হচ্ছে বিজয়ী মেম্বার,মোনাযেম খা এবং মদদ দাতা বর্তমান চেয়ারম্যান। সরজমিনে পরিদর্শনকালে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ খড়কী গ্রামের যে চিত্র পাওয়া গেছে তা হলো, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রায় নব্বই ভাগ মানুষই রোহিঙ্গা উদ্ববাস্তু শ্বর্নার্থী হয়ে এগ্রাম ওগ্রামে খেয়ে না খেয়ে এক কাপড়ে মানবেতার জীবন-যাপন করছে । তারা এমনই এক ভিতিকর অবস্থার মধ্যে পালাতে বাধ্য হয়েছে যে বৈদ্যুতিক বাতিটি পর্যন্ত নিভাতে ভুলে গেছে ।
দিনে দুপুরেও প্রতিটি পরিত্যক্ত জনশূন্য দরজায় তালাবদ্ব অবস্থায় বাতি জ্বলছে । জনশূন্য ঘর-বাড়ী,মার্কেট আর দোকান-পাঠ । প্রাথমিক বিদ্যালয় ,মক্তব, মাদ্রাসা ও মসজিদেও জনশূন্যতার প্রভাব দেখাদিয়েছে । আজ পবিত্র রমজান মাসের প্রথম ধাপের রহমতের দরজা খোলা । কিন্তুক খড়কীবাসী কেন এই রহমত থেকে বঞ্চিত ? সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর । তাহলে অসহায় মানুষ গুলো রোহিঙ্গা শ্বরনার্থী হয়েই কি ঈদ উৎসব পালন করবে ? মানবতার আদালতে কি তাদের জন্য মঙ্গল জনক কিছু নেই ? তাই সমগ্র উপজেলাবাসী স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন আইন শৃংখলা বাহীনির কৃপার দিকে চেয়ে আছে ।