নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : আর মাত্র ক’দিন পর হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন। ইতিমধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী।
১৫টি সাধারণ আসন এবং ৫টি সংরক্ষিত আসনে ভাগ করা হয়েছে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ’কে। এরমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও বাহুবলের স্লানঘাট ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে ৩টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১ টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠিত। ৩ টি সাধারন আসনে ১৫ জন এবং ১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে প্রার্থীদের নির্ঘুম প্রচার-প্রচারনায় ব্যাপক উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেট এখন ছড়িয়েগেছে গোটা উপজেলা। প্রতিনিয়ত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বিরামহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রচারনা। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা কৌশল এবং বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গিতে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারনা।
নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইসচেয়ারম্যানগণ, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরগণ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তবে ভোটারদের মতিগতি বুঝা মুসকিল। মূখ ফুটে কেউ কিছু বলতে নারাজ। ফলে প্রার্থীরা হতাশায় রয়েছেন।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানাযায়, এ বারের নির্বাচনে সৎ, যোগ্য এবং যাকে সব সময় সুখে-দুঃখে এবং এলাকার উন্নয়নে কাছে পাওয়া যাবে এমন প্রার্থীকেই ভোট দিতে আগ্রহ তারা। নবীগঞ্জ উপজেলার ১,২,৩,৪ ও ৫ নং ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত জেলা পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড। এখানে প্রার্থী রয়েছেন ৬ জন।
ভোটের ময়দানে ত্রিমূখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ আসনে। এই ওয়ার্ডে প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী গৌতম কুমার দাশ, আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী গোলাম হোসেন আজাদ, ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন, ফয়সল আহমদ, ফুল মিয়া পাঠান, মোতাচ্ছির খান, নিজামুল ইসলাম ও আছাবুর রহমান আছাবসহ ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এরমধ্যে গৌতম কুমার দাশ, জামাল উদ্দিন ও আছাবুর রহমান আছাবের মধ্যে ত্রি-মূখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬,৭, ৮, ৯ নং ইউনিয়ন পরিষদ এবং নবীগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে গঠিত ৫ নং ওয়ার্ড। উক্ত আসনটি উপজেলা সদর কেন্দ্রীক হওয়ায় বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
এই আসনে প্রতিদ্বন্ধি আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযৃক্তি বিষয়ক সম্পাদক শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব হেলাল আহমেদ রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে। যা অন্য প্রার্থীদের অনুপস্থিত। তবে এখানেও লড়াই হবে ত্রি-মূখী। এ আসনে রয়েছেন ৫ জন প্রার্থী। আলহাজ্ব হেলাল আহমেদ ছাড়াও অপর প্রার্থীরা হলেন ব্যবসায়ী আব্দুল মালিক, শেখ সফিকুজ্জামান শিপন, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মুহিত এবং প্রাক্তন মেম্বার আজিজুল হক। তবে মুল প্রতিদ্বন্ধিতা হবে হেলাল আহমেদ, আব্দুল মালিক ও শেখ শিপনের মধ্যে। এমন আবাসই দিয়েছেন ভোটাররা।
১০, ১১, ১২, ১৩ ও বাহুবলের স্লানঘাট ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৬নং ওয়ার্ড। এখানে প্রার্থী রয়েছেন ৪ জন। আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট সুলতান মাহমুদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক ( জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত) এমএ আহমদ আজাদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ এবং প্রবাসী মসুদ আহমদ। এখানে সমানতালে প্রতিদ্বন্ধিতা হলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে দ্বী-মুখী। সার্বিক বিবেচনায় এডভোকেট সুলতান মাহমুদ রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে। এছাড়া সংরক্ষিত আসনে দু’ জন প্রার্থী রয়েছে। লন্ডনস্থ ল্যাস্টার যুব মহিলালীগের সভাপতি তারুনা বাহার কলি এবং সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরীন আক্তার প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। দু’ জনের মধ্যেই তুমুল লড়াই হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
নির্বাচনে কন কনে শীত’কে উপেক্ষা করে প্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্ঘুম প্রচারনা। নাওয়া – খাওয়া ভুলে গিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রার্থীদের প্রচারনা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৯ টা থেকে বেলা ২ ঘটিকা পর্যন্ত ৩টি কেন্দ্রে বিরতীহীন ভাবে চলবে ভোট গ্রহন। ৪নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র হলো ইনাতগঞ্জ হাইস্কুল, ৫ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র নবীগঞ্জ হিরা মিয়া গার্লস স্কুল এবং ৬ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্র গোপলার বাজার হাইস্কুল।
নবীগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজে। ভাসছে ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটে। ২৮ ডিসেম্বর কে হাসবে বিজয়ের হাসিঁ, তা দেখার অপেক্ষায় ভোটারসহ নবীগঞ্জবাসী।