মোঃ আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথে সড়কের বেহালা দশা, দেখে ছেলে-বুড়ো সকলেই যেন একসাথে বলতে চায় “মনোওয় ই রাস্তার কোন মাই-বাপ নাই এর লাগিই অতবাদ অবস্থা”বিশ্বনাথ উপজেলার মিরেরচর-ইলামেরগাঁও-পুরাণগাঁও-হাসনাজির সড়কের’ মাধ্যমেই উপজেলার তিনটি (বিশ্বনাথ, রামপাশা ও দৌলতপুর) ইউনিয়নের সেতুবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে।
সংস্কারের অভাবে তিন ইউনিয়নের সংযোগ স্থাপনকারী সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এ কারণে প্রতিদিন ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকায় প্রায় ছয় হাজার মানুষ।
প্রায় চার কিলোমিটার দৈঘ্যের সড়কের প্রথম এক কিলোমিটার পিচঢালাই (পাকা), পরবর্তি প্রায় আধা কিলোমিটারে রয়েছে ইটসলিং ও অবশিস্ট অংশ মাটির। প্রথম এক কিলোমিটারে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত ও ভাঙ্গন। যে কারণে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ ও যানবাহনের চালকরা।
সড়কটির শেষের প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশে শুষ্ক মৌসুমে সহযে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে তা অসম্ভব হয়ে হঠে। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে সড়কে কাঁদা সৃষ্টি হওয়ার ফলে চলাচলে জনসাধারণের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি সমস্য হয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও কৃষকদের।
মিরেরচর-ইলামেরগাঁও-পুরাণগাঁও-হাসনাজির সড়কের দুই পার্শ্বের তিনটি গ্রামে রয়েছে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কয়েকশ মাধ্যমিক ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিদিন এ সড়ক ব্যবহার যেতে হয় নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এলাকার দরিদ্র রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা নিতে যেতে হয় কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এছাড়া এলাকার কৃষকদের কৃষি কাজের জন্য জমিতে ও মুসল্লীদের নামাজের সময় মসজিদে যেতে ব্যবহার করতে হয় ওই সড়কটিই।
বর্তমানে বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের উত্তর মিরেরচর, রামপাশা ইউনিয়নের ইলামেরগাঁও, পুরাণগাঁও, বিশঘর (একাংশ), দৌলতপুর ইউনিয়নের হাসনাজির, ধনপুর গ্রামের জনসাধারণ এ সড়কে যাতায়াত করে থাকে।
তবে সড়কটি সংস্কার ও অবশিস্ট অংশ পিচঢালাই করা হলে আরোও অনেক গ্রামের মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পাবে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের পহেলা জুলাই উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন সড়কটির প্রথম এক কিলোমিটার পিচঢালাই (পাকাকরণ) বাস্তবায়ন সম্পন্ন করে এর উদ্বোধন করা হয়। এরপর এ সড়কে আর কোন সংস্কার কিংবা সড়কের অবশিস্ট অংশ পিচঢালাই এর কাজ করা হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার ও অবশিস্ট অংশ পিচঢালাই করার দাবি জনপ্রতিনিধিদের কাছে জানিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। জনদুর্ভোগ লাগবে শীঘ্রই সড়কটির সংস্কার এবং ইটসলিং ও মাটির অংশ পিচটালাই করার দাবি করেন এলাকাবাসী।
দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমির আলী সাংবাদিক কে বলেন, জনগূরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি সংস্কার ও পিচঢালাই (পাকাকরণ) করা এখন সময়ের দাবি। সড়কটির সংস্কার ও পিচঢালাই কাজ সম্পন্ন করা হলে উপজেলা সদরের সাথে দৌলতপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষের সহযে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
পুরাণগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটির করুণ দশায় চলাচলে এলাকাবাসী দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তার উপর বর্ষাকালে সড়কে বৃষ্টির পানিতে কাঁদা সৃষ্টি হওয়ার ফলে আমাদের দুর্ভোগ আরোও বেশি বেড়ে যায়। ফলে বাধ্য হয়ে পায়ের জুতা হাতে নিয়ে আমাদেরকে যাতায়াত করতে হয়।
ইলামেরগাঁও গ্রামের অটোরিকশা চালক আমির আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কোন সংস্কার কাজ না হওয়ার কারণে যাতায়াত করতে গিয়ে সড়কের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হওয়া গর্তে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আমাদের (চালক) যানবাহন। যাত্রীরা হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার।
জনগূরুত্বের দিক দিয়ে সড়কগুলো পিচঢালাই করা হয়ে থাকে ও পর্যায়ক্রমে উপজেলার সড়কগুলোর সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেন জানান উপজেলা প্রকৌশলী আবু-বক্কর সিদ্দিকী।
এব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া সাংবাদিক কে বলেন, পর্যায়ক্রমে সড়কগুলোর সংস্কার ও পিচঢালাই কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।