বাহার উদ্দিন,লাখাই থেকে : শিল্প বর্জের দুষনের কবলে লাখাইয়ের অন্যতম সুতাং নদী । বিভিন্ন শিল্পকারখানার অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্যের দুষনের ফলে সুতাং নদী অস্তিত্ব হারানোর পথে রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে নানারিকম বর্জ্যের কারণে নদীর পানি ঘন কালো বর্ন ধারন করেছে। এরফলে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ, মারা যাচ্ছে নদীর মাছ, নস্ট হচ্ছে পরিবেশ, কিন্তু পরিবেশবাদীরা তবুও নিরব। নদীর পাড় দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। নদীর জল কালো ও বিবর্ন হয়ে পড়ায় মৎস্য শুন্য হয়ে পড়েছে নদীতে ।
এক সময়ের শান্তও স্বচ্ছ নীল জলরাশির সুতাং নদীটি আজ মৃত প্রায়।নদীর তীরে গড়ে উঠা হাট বাজার ও গ্রামের লোকজন নিয়মিত গোসল করতো,গৃহস্থালি কর্ম সম্পাদন করতো কিন্তু তা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।সুতাং অববাহিকায় বিস্তীর্ণ হাওরের বোরো ফসলের মাঠে এ কালো ও দূর্গন্ধ যুক্ত জলে সেচকার্য চলে।
এতে একদিকে সেচকাজে কৃষকদের ভোগান্তি অন্যদিকে শিল্পবর্জ্যে দুষিত জলে সেচকাজ চলায় কৃষিক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দীর্ঘদিন যাবত খননের অভাবে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে নদী শুকিয়ে যাওয়ার ফলে সেচকার্য বিঘ্নিত হচ্ছে। এরই মধ্যে মরার উপর খাড়ার ঘা এর মতো২০১৫ সাল থেকে হবিগঞ্জ এর উজানে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় গড়ে উঠা শিল্পাঞ্চল এর শিল্পবর্জ্যে সুতাং নদীর এই বেহাল দশা বলে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে।
এদিকে, বর্ষায় নদীর জল প্রবাহ বেশী থাকায় দুষণ তেমন দৃষ্টি গোচর না হলেও শুষ্ক মৌসুমে নদীর জল কমে যাওয়ায় তা প্রকট আকার ধারন করে।এ অবস্থা থেকে উত্তোরনে লাখাইর সচেতন মহল ও বি্ভিন্ন পরিবেশ বাদী সামাজিক সংগঠনের পক্ষে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন নিবেদন করেও অদ্যাবধি কোন ফলোদয় হয়নি।একদিকে সুতাং দুষনের ভয়াবহতা ও ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হলেও তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুনজরে আসেনি।
এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং সুতাং নদীর শিল্পবর্জ্য দুষনের রোধে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহন না করলে লাখাইর কৃষি, মৎস্য ও পরিবেশএবং জীব বৈচিত্রের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে।এ থেকে উত্তোরনে এবং লাখাইর প্রধান নদী সুতাং কে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন লাখাইর ভুক্তভোগী মহল।
সুতাং নদীর শিল্পবর্জের দুষনের বিষয়ে লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং এর সাথে আলাপকালে জানান,সুতাং নদী দুষণের উৎস যেহেতু শায়েস্তাগঞ্জ এ অবস্থায় আমাদের তেমন করনীয় নেই,তবে এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পাঠাব, যেন তারা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করেন।